হেলথ নিউজ ::::: এপ্রিল – ’১২

 

স্বাস্থ্য

সম্পর্কিত

তথ্য

 

 

কিডনীতে পাথর হয় কেন?

 

অনেকেরই কিডনীতে পাথর হয়। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না – এটা কেন বা কী কারণে হয়?

 আমরা জানি, ভিটামিন’এ-এর অভাবে অন্ধত্ব, ডায়রিয়া প্রভৃতি রোগ হয়ে থাকে। মূলত কিডনীতে পাথর হবার কারণও ভিটামিন ‘এ’-এর অভাব। ভিটামিন ‘এ’-এর অভাবে শরীরের বিভিন্ন অংশের কোষগুলো ঝরতে শুরু করে। যার ফলে ডায়রিয়া, অন্ধত্ব প্রভৃতি রোগ দেখা দেয় এবং ত্বকের সৌন্দর্য হ্রাস পায়। তখন ঝরে যাওয়া কোষগুলো কিডনীর নিঃসরণ অংশে জমতে শুরু করে। ধীরে ধীরে ক্ষয়ে পড়া এই কোষগুলোর উপরিভাগে ক্যালসিয়াম ও ফসফেটের আস্তরণ পড়ে। ক্রমান্বয়ে তা পরিণত হয় পাথরে।

 এজন্য আমাদের পূর্ব থেকেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। খাওয়া প্রয়োজন ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ খাবার। সামুদ্রিক মাছের তেল, গাজর, পাকা ফল, ছোট মাছ ও সবুজ শাক-সবজি প্রভৃতিতে ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে। তাছাড়া অত্যাধিক পরিমাণে পানি পান করা অত্যাবশ্যক।

 

– আমিনুল ইসলাম মামুন

 

 

কিডনি অকেজো হলে বুঝবেন কিভাবে?

 

আমাদের দু’টি কিডনি দেখতে সীম আকৃতির, প্রায় হাতের মুষ্টির সমান। এ দু’টোর অবস্থান পিঠের প্রায় মধ্যভাগে, পঞ্জরাস্থির নিচে। এগুলো রক্ত পরিষ্কার করে। এছাড়াও কিডনি প্রয়োজনীয় যৌগ রেখে  দিয়ে বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত তরল পদার্থ দেহ থেকে বের করে দেয়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণ ঠিক রাখতে ভূমিকা রাখে এটি।

কিডনি প্রতি ৩০ মিনিটে একবার দেহের রক্ত পরিষ্কার করে। ঠিকমত বর্জ্য অপসারণ করতে না পারলে কিডনির ব্যর্থতা ঘটে। ফলে দেহের মধ্যে বর্জ্য ও বাড়তি তরল জমতে থাকে। রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসক কিডনির ব্যর্থতা শনাক্ত করতে পারেন।

সহসাই ঘটতে পারে এ কিডনি ব্যর্থতা। প্রবল সংক্রমণ, ওষুধ কিংবা অন্যান্য রাসায়নিক কনসেপ্টের কারণে এরকম ঘটতে পারে। অভ্যন্তরীণ কারণের সফল চিকিৎসা হলে কিডনি পুরোপুরি ভাল হয়। পুরনো কিডনি ব্যর্থতা দীর্ঘ সময় ধরে গড়ে। এর ফলে ওজন কমে যাওয়া, রক্তশূন্যতা, বমনেচ্ছা, বমি, কান্তি, মাথাব্যথা, বুদ্ধিবৃত্তির লোপ, পেশীতে ব্যথা ও খিঁচুনি, ত্বকের রং হলদেটে বা বাদামি হয়ে যাওয়া, অস্বাভাবিক চুলকানি, ঘুমে ব্যঘাত ইত্যাদি ঘটে। শেষ পর্যায়ের কিডনি ব্যর্থতার ফলে রক্তশূন্যতা, উচ্চ রক্তচাপ, হাড়ে সমস্যা, হৃদ ব্যর্থতা, মানসিক বিপর্যয় ইত্যাদি ঘটে।

কিডনির কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে ডায়ালাইসিস করতে হয়। হেমোডায়ালাইসিস পদ্ধতিতে একটি যন্ত্রের সাহায্যে রক্ত প্রেরিত হয়। এই যন্ত্র বর্জ্য পরিচ্ছন্ন করে এবং নির্মল রক্ত দেহে ফেরত পাঠায়। পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস পদ্ধতিতে ডায়ালাইসেট নামক তরল পেটে প্রেরিত হয়। এটি রক্ত থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে দেহের বাইরে পাঠায়।

প্রস্রাবে ব্যথা কিংবা জ্বালাপোড়া হলে, বারবার প্রস্রাবের বেগ হলে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন। এ ছাড়া প্রস্রাব কালো হলে, জ্বর কিংবা শৈত্যের অনুভূতি হলে, পিঠে কিংবা দেহের উভয় পার্শ্বে পঞ্জরাস্থির নিচে ব্যথা হলে, কিডনির কোন সমস্যা হয়েছে কিনা – সে ব্যাপারে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের সুচিকিৎসা হলে অনেক ক্ষেত্রে কিডনির রোগ নিবারিত হতে পারে।

 

 – আহমদুল হক

 

 

হার্ট অ্যাটাক কেন হয়?

 

হার্ট অ্যাটাক মানুষের জন্য একটি বড় সমস্যা। বর্তমানে অনেক কম বয়সী মানুষও হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হচ্ছে।

 হার্ট অ্যাটাকের সাধারণ কারণ হিসেবে বলা হয়ে থাকে যে, অতিরিক্ত পরিমাণ চর্বি ধমনীর রক্ত প্রবাহের সরবরাহ করতে পারে না। যার ফলে মানুষের হার্ট অ্যাটাক দেখা দেয়। কিন্তু এখন হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত এমন অনেক রোগী দেখা যাচ্ছে যাদের ধমনীতে কোন চর্বি নেই। এ সমস্যা বিজ্ঞানীদের চিন্তিত করে তুলেছে। গবেষণার পর তারা কুল কিনারা লাভ করেন। তবে তার আগে আমরা দেখব, কিভাবে এ ধরনের চর্বি দ্বারা বাধাগ্রস্ত ধমনী সনাক্ত করা হয়।

 এটি অতি সাম্প্রতিক একটি আবিষ্কার। রেনসেলার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মাইকেল সেভিন তার সহকর্মীদের সাহায্যে এ পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। তারা এ পদ্ধতি সর্বপ্রথম ঘাড়ের ক্যারোটিড ধমনীর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেন। প্রথমে ঘাড়ের চামড়ার উপর হতে ঐ ধমনীতে আলট্রাসাউ ও বীম পাঠানো হয়। এ শব্দ রক্তের লোহিত কণিকার সাথে ধাক্কা খেয়ে পুনরায় ফিরে আসে। এভাবে উৎপন্ন প্রতিধ্বনিকে মনিটরিং করে ঐ ধমনীর সুস্থতা নির্ণয় করা হয়।

 বিজ্ঞানীরা তাদের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখেছেন যে, মস্তিষ্কের উন্নত অংশের একটি অতি ক্ষুদ্র অংশ হৃৎপি- ও রক্তবাহী নালিকার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত রক্তের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে। কোন কারণে মস্তিষ্কের এ অংশে অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে তা দেহের হৃৎযন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলে। হাইবেজুলেশন ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্সের মাধ্যমে মস্তিষ্কের এই গুরুত্বপূর্ণ অংশকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এটি মস্তিষ্কের ইনসুলার কর্টেক্সের সামান্য একটি অংশ যা কর্ণতলের সামান্য উপরে মস্তিষ্কের একটি ভাজের মধ্যে অবস্থান করে।

 বিজ্ঞানীরা এর আগে ইঁদুরের উপরে এ পরীক্ষা চালিয়েছেন এবং বিদ্যুতের সাহায্যে মস্তিষ্কের এ অংশকে উত্তেজিত করে তারা ইঁদুরের হৃৎপি-ের রক্ত সঞ্চালনের হার নিয়ন্ত্রণ করতেও সক্ষম হন।

 তাহলে আমরা বুঝতে পারছি যে, ডায়েটিং বা ব্যায়ামের মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাক ঠেকানো সম্ভব নয় এবং যে কোন বয়সের মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

 এতদিন আমাদের শুধু জানা ছিল যে, অতিরিক্ত চাপের কারণে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। অতিরিক্ত চাপ ও উত্তেজনার কারণে মানুষ কার্ডিয়াক ডেথ, অ্যাথারোস্কোরোসিস, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকসহ নানাবিধ হৃৎপি- সংক্রান্ত সমস্যায় পড়তে পারে। কিন্তু কেন এরূপ হত, তা জানা ছিল না। তাই আশা করা যাচ্ছে, এ আবিষ্কার এ ধরনের সমস্যার কারণ বের করে অনেক মানুষের জীবন বাঁচাবে।

 

– এ এস এম মাসুম বিল্লাহ

 

 

এমকো গাছে এইডসের ঔষধ

 

ক্যামেরুনের ইওন্ডি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্র প্যাসক্যাল ওয়াকো ‘এমকো’ নামক একটি গাছ থেকে এইডসের বিরুদ্ধে কার্যকরী সক্রিয় উপাদানের সন্ধান পেয়েছেন। গাছটি ক্যামেরুনের দেশজ গাছ হিসেবে অধিক প্রসিদ্ধ।

রেকটর জ্যাক ফেম এন্ডনগো বলেন, এইডস-এর মূল কারণ এইচআইভি ভাইরাসের বৃদ্ধিরোধে এ উপকরণটি অধিক কার্যকর। তিনি আশা করেন, ইওন্ডি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে  এইডস  প্রতিরোধে কার্যকর ওষুধ আবিষ্কার হবে। এ উপকরণটি মানব কোষের সাথে ভাইরাসের মিশ্রণে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে।

 

– মুহাম্মদ আমীরুল হক চৌধুরী

 

 

ক্যান্সার প্রতিরোধে টমেটো

 

ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের প্রকাশিত এক জার্নালে বলা হয়, ক্যান্সার হওয়া কমবে যদি প্রচুর টমেটো খাওয়া যায়। এ ব্যাপারে মোট ৭২টি সমীক্ষণ চালানো হয়।

প্রকাশিত প্রতিবেদনের লেখক ডা. এডওয়ার্ড গিওভানুসি জানান, ৭২টি সমীক্ষণের মধ্যে ৫৭টিতেই দেখা গেছে – টমেটো ফুসফুস, পাকস্থলী ও প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের ক্যান্সার রোধে উপকারী। টমেটোর সাথে অগ্ন্যাশয়, মুখ এবং স্তন ক্যান্সারসহ অন্য কয়েকটি ক্যান্সারের ঝুঁকি কম হওয়ারও যোগসূত্র রয়েছে।

নিউইয়র্কের মেমোরিয়াল স্লোয়ান কেটারিং ক্যান্সার সেন্টারে ‘ক্যান্সার প্রতিরোধ ও নিরাময়’ কর্মসূচীর পরিচালক মোশে শাইক বলেন, টমেটো অন্যান্য ফল ও সবজির চেয়ে অনেক বেশী সমৃদ্ধ।

 

– আবু জাফর ইকবাল

 

মধুর অনেক রকম উপকার

 

বৈজ্ঞানিকগণের বিশ্লেষণে মধুর নিম্নবর্ণিত গুরুত্বপূর্ণ গুণাগুণ বেরিয়ে এসেছে –

 * মধুতে প্রচুর পরিমাণে গ্লুকোজ ও ফ্রুকটোজ আছে, যা এনার্জি দেয়। ফলে দীর্ঘ ডায়েট করার পরও কান্তবোধ হবে না। মধু পান নার্ভকে শান্ত রাখে।

 * এতে দীর্ঘদিন তারুণ্য বজায় থাকে।

 * খুব বেশী টেনশন ফিল বা কান্তবোধ করলে তখন ১ চা চামচ মধু খেলে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে তা সরাসরি ব্লাড স্ট্রিমে পৌঁছে শরীরে এনে দিবে সতেজতা ও কান্তিহীনতা।

 * বাচ্চাদেরকে পানির সাথে মধু মিশিয়ে খাওয়ালে তারা সুন্দর ও সবল হয়ে ওঠতে পারে।

 * ছোটবেলা থেকেই বাচ্চার চুল ও ত্বকের বিশেষ যতেœ চাই বিশেষ ধরনের মিনারেল। যা সব খাদ্যতালিকায় পাওয়া যায় না। অথচ দুষ্প্রাপ্য এই সবগুলো উপাদানই রয়েছে মধুর মধ্যে।

 * শরীরে চর্বিজাতীয় পদার্থ জমে যাওয়ার ভয়ে অনেকেই মিষ্টি খেতে চান না। কিন্তু বিভিন্ন ফল দিয়ে ফ্রুট টস স্যালাড তৈরী করে কয়েক চামচ মধু মিশিয়ে খেলে শরীরে ফ্যাট জমে যাওয়ার কোন আশঙ্কা থাকে না।

 * রান্নার কাজে হাত পুড়ে গেলে পোড়া জায়গায় সামান্য মধু লাগালে কিছুক্ষণের মধ্যে জ্বালা কমে যাবে।

 * প্রচণ্ড শীতের সময় বেশী মধু খেলে শীতের প্রকোপ কমে যায় এবং রক্ত সঞ্চালন দ্রুত হয়।

 

– মোজাম্মেল প্রধান

 

 

 

Related posts

Leave a Comment